৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকায় কেমন ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে
আপলোড সময় :
২৯-০৩-২০২৫ ০১:১৬:২০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৯-০৩-২০২৫ ০১:১৬:২০ অপরাহ্ন
রিখটার স্কেলে ৭ বা ৮ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে ঢাকার অধিকাংশ ভবন ধসে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া উদ্ধার তৎপরতা চালানোর দক্ষতাও তেমনভাবে গড়ে ওঠেনি বলে অনেকের অভিমত। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা বলছেন, ভূমিকম্পসহ যেকোনও ধরনের দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে প্রস্তুত তারা।
২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরি সেন্টার পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে বাংলাদেশেও। মাটির নিচে ভারতীয়, ইউরেশিয়ান ও মিয়ানমার প্লেটের সংযোগস্থলের ওপর বাংলাদেশের অবস্থান। এ কারণেই এই ঝুঁকি।
২০১৬ সালের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও মিয়ানমার টেকটনিক প্লেটের মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান। এই প্লেট কয়েকশ’ বছর ধরে শক্তি সঞ্চয় করছে এবং গত একশ’ বছরে বাংলাদেশে বা আশপাশের অঞ্চলে বড় কোনও ভূমিকম্প হয়নি। তাই যেকোনও সময় হতে পারে ভূমিকম্প। যার মাত্রা হতে পারে রিখটার স্কেলে ৮-এর কাছাকাছি। ভারত-বার্মা প্লেটের ওপরে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অবস্থান হওয়ায় সেখানে ঝুঁকির মাত্রা বেশি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে সেসব এলাকা।
ভূতত্ত্ববিদদের শঙ্কা, যদি রিখটার স্কেলে ৭ বা ৮ এর কাছাকাছি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়, তাহলে রাজধানীর অধিকাংশ ভবন ধসে পড়বে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর সৈয়দ হুমায়ূন আখতার বলেন, সিলেটে আমরা যেটা জানি সব গ্যাসক্ষেত্র সেখানে। এরপর রয়েছে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি। পাওয়ারপ্ল্যান্ট রয়েছে। যেগুলো একদম ভূমিকম্পের উৎসের ওপরে অবস্থিত। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়, শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে এগুলোর অস্তিত্ব তখন আর থাকবে না।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মাটির নিচ দিয়ে সেবা সংস্থাগুলোর (গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ) বিভিন্ন লাইন গেছে। ভূমিকম্পের ফলে কোনও ভবন ধসে পড়লে সেসব সেবা লাইন উপড়ে যাবে। সেগুলো তখন জনজীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী হাসান আনসারী বলেন, ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বিল্ডিং নির্মাণের সময় ভূমিকম্প সহনশীল হিসেবে তা নির্মাণ করতে হবে। সঠিক ডিজাইন অনুযায়ী ভবন নির্মাণ হলেও ২৫ ভাগ ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মাটির নিচে পাথর ও অন্যান্য খনিজের বিশাল আকৃতির (শত বা হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ) খণ্ডগুলোকে প্লেট বলে। অনমনীয় এই প্লেটগুলো চলমান অবস্থায় থাকে। চলতে চলতে একটির সঙ্গে অন্যটির ঘর্ষণ বা সংঘর্ষের ফলে অনেক সময় ফাটল তৈরি হয়। মাটির নিচের ওই ঘর্ষণ বা ফাটল থেকে ভূপৃষ্ঠে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স